মধ্যমগ্রামের পথ দুর্ঘটনায় দুই যুবকের মৃত্যু ঘিরে তীব্র উত্তেজনা

সপ্তাহের শুরুতেই পথ দুর্ঘটনায় এক যুবকের মৃত্যু ঘিরে তীব্র উত্তেজনা ছড়াল উত্তর ২৪ পরগনার মধ্যমগ্রামে। ঘটনার জেরে জাতীয় সড়ক যশোর রোড অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়রা। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে, উত্তেজিত জনতা স্থানীয় ট্রাফিক পুলিশের বুথে ভাঙচুর চালায় বলেও অভিযোগ। পরে বারাসাত পুলিশ জেলার বিশাল পুলিশবাহিনী ও জেলা পুলিশের আধিকারিকদের উপস্থিতিতে পরিস্থিতি সামাল দিয়ে তোলা হয় অবরোধ। জানা গিয়েছে , এদিন ভোরে কাজী নজরুল ইসলাম সরণিতে একটি দ্রুতগতির মাছবোঝাই পিকআপ ভ্যান সজোরে ধাক্কা মারে একটি বাইকে। বাইকটিতে তখন ছিলেন দুই যুবক। সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় এস কে কাসিদ নামে বছর ২৫ এর যুবকের। আশঙ্কাজনক অবস্থায় আরও এক আরোহী জিয়ারুল রহমানকে ভর্তি করা হয় স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে। সংঘর্ষের তীব্রতায় রীতিমত উল্টে যায় পিকআপ ভ্যানটিও। চালক ও খালাসি গাড়ি ফেলে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় বলেও জানা গিয়েছে। দুর্ঘটনার পরই ক্ষোভে ফেটে পড়ে রাস্তায় নেমে আসেন স্থানীয় বাসিন্দারা, বাদ যাননি মহিলারাও। ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে অবরোধ চলে যশোর রোডে। তাঁদের অভিযোগ, পুলিশের বিরুদ্ধে টাকা তোলার এবং ঘটনার পরই পুলিশ ওই গাড়ির চালককে পালাতে সাহায্য করেছে। এই ক্ষোভের আঁচ দিয়ে পড়ে স্থানীয় ট্রাফিক পুলিশের বুথে, চলে ভাংচুর। পরিস্থিতির রণক্ষেত্রের চেহারা নিলে ঘটনাস্থলে পৌঁছান বারাসত এসডিপিও বিদ্যাগর অজিঙ্কা অনান্ত, মধ্যমগ্রাম থানার ওসি-সহ বিশাল পুলিশ বাহিনী। জনতার বিক্ষোভ ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। পুলিশের আশ্বাসে প্রথম দফায় অবরোধ ওঠে ঠিকই, তবে পরে ফের উত্তেজনা ছড়ালে আবার অবরোধের পথে হাঁটেন স্থানীয়রা। এরপরই ঘটনাস্থলে পৌঁছান বারাসত পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অতিস বিশ্বাস। শুরুতে তিনি পরিস্থিতি ঠান্ডা করার চেষ্টা করলেও, জনতা উত্তপ্ত হয়ে উঠলে দাবাং ভূমিকা নেন। ঘটনাস্থলে নিয়ে আসা হয় র্যাফ। পুলিশের তৎপরতায় অবশেষে দ্বিতীয় দফার অবরোধ তুলে পরিস্থিতি ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। যদিও পুলিশের ভূমিকা নিয়ে এলাকাবাসীদের ক্ষোভ এখনও রয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। যদিও এখনও পর্যন্ত কাউকে আটক বা গ্রেফতার করা যায়নি। অবরোধের কারণে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হলেও, পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
পরবর্তীতে, হাসপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি হওয়া ওই দ্বিতীয় আরোহীর মৃত্যু ঘটলে আবারো উত্তেজনা চরমে পৌঁছায়। উত্তেজিত জনতা মধ্যমগ্রাম থানায় ভাঙচুর চালায় বলেও অভিযোগ। এরপরই, পরিস্থিতি সামাল দিতে কড়া ভূমিকা নেয় পুলিশ। যশোর রোডে উল্টে যাওয়া পিকআপ ভ্যানটিকে মধ্যমগ্রাম থানায় নিয়ে আসা হয়। পিক আপ ভ্যানে মাছ ভর্তি থাকায়, রাস্তায় ওই মাছ পড়ে যায়। রাস্তায় এখনো ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে মাছের চিহ্ন। মৃতদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা চালানো হচ্ছে পুলিশের তরফ।